কে খুন করল প্রবাসীর স্ত্রীকে- স্বামী ধলা মিয়া থাকেন বিদেশে। টাঙ্গাইলের বাসাইলের নথখোলা গ্রামে থাকেন তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৩৭)। গত ১ জানুয়ারি নিজ ঘরে খুন হন এই গৃহবধূ। হাত পা বেঁধে, পায়ের রগ কেটে ও গলাকেটে তাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় নিহত মনোয়ারা বেগমের সহোদর (আপন ভাই) মো. আব্দুল কাদেরের স্ত্রী তাছলিমা খাতুন খুকি (২৮) বাদী হয়ে বাসাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত করতে ২২ দিন পার করে দেয় থানা পুলিশ। রহস্যের জট খুলতে পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) দক্ষিণের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শ্যামল কুমার দত্তকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।
তদন্তে নেমেন পড়েন ডিবির এসআই জাহাঙ্গীর আলম, এসআই ওবাইদুর রহমান ও এসআই আলমগীর কবির। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তারা চমকে যান। একে একে বেরিয়ে আসে খুনীদের মুখ। খুলতে থাকে নিষ্ঠুর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য।
তদন্তে প্রমাণ পাওয়ার পর গ্রেফতার করা হয় বাসাইলের কাশিল পশ্চিম পাড়া গ্রামের মো. সোলায়মানের ছেলে মো. রহিম মিয়াকে (২৬)।
খুনের পরিকল্পনাকারীর নাম শুনলে পাঠকও চমকে উঠবেন।
খুনের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন নিহতের ভাবী তাছলিমা খাতুন খুকি (২৮), খুনের পরই যিনি বাদী হয়ে মামলা করেন।
পুরো খুনে সহায়তার জন্য তাছলিমার সহোদার টাঙ্গাইল শহরের আকুর টাকুর পাড়া গ্রামের মো. আল আমিন (১৯)কেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
যেভাবে হত্যা করা হয়
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনই হত্যার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করে।
২৯ জানুয়ারি মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন আসামিরা।
স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামসুল আলম, আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, মো. আমিনুল ইসলাম।
আসামিরা স্বীকারোক্তিতে জানান, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বর রাতে কোমল পানীয়ের সাথে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে মনোয়ারা বেগমকে দুর্বল করা হয়। পরে হাত-পা বেঁধে ধারালো চাকু দিয়া তার পা ও হাতের রগ কেটে এবং জবাই করে হত্যা করে অভিযুক্তরা।
আলামত
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মো. রহিম মিয়ার একটি রক্তমাখা প্যান্ট, এক জোড়া জুতা ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় সংবাদ সম্মেলনে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের কাহিনী বর্ণনা করেন।
পুলিশ সুপারের ধারনা, মাদক সেবন, পরকীয়া ও টাকা আত্মসাতের জন্যই এই হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে।
আত্মহত্যার আগে স্ত্রীর প্রেমিকদের নিয়ে স্বামীর স্ট্যাটাস
আজ বৃহস্পতিবার সকলে চান্দগাঁও আবাসিকের দুই নম্বর সড়কের ২০ নম্বর বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি চন্দনাইশ উপজেলার বাংলাবাজার বরকল এলাকার মৃত আব্দুস সবুরের ছেলে। তিনি এমবিবিএস শেষ করে এফসিপিএস পড়ছিলেন।
ডা. আকাশ স্ট্যাটাসে স্ত্রীর উদ্দেশে লেখেন- ‘ভালো থেকো, আমার ভালোবাসা তোমার প্রেমিকাদের (প্রেমিকদের) নিয়ে।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ জানান, ‘আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আকাশ নামের ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার স্বজনরা। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বজনদের দাবি, রাতে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার জেরে আত্মহত্যা করেছে আকাশ। তবে তিনি আসলেই আত্মহত্যা করেছে কি না তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্নও নেই।’
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর এক ঘণ্টা আগে তিনি স্ট্যাটাসটি দেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ জানান, ‘আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আকাশ নামের ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার স্বজনরা। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বজনদের দাবি, রাতে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার জেরে আত্মহত্যা করেছে আকাশ। তবে তিনি আসলেই আত্মহত্যা করেছে কি না তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্নও নেই।’
আত্মহত্যার আগে ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশ ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন,
‘‘আমার সাথে তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর ২০০৯ সাল থেকে পরিচয়। প্রচণ্ড ভালবাসি ওকে। ও নিজেও আমাকে অনেক ভালবাসে। আমরা ঘুরে বেড়াই, প্রেম করে বেড়াই। আমাদের ভালবাসা কম বেশি সবাই জানে। অনেকে বউ পাগলাও ডাকত।
…আমিতো বেঁচে থেকেও মৃত হয়ে গেলাম। তারপর ক্ষমা চাইল শবে কদরের রাতে, কান্না করে পা ধরে আর কখনো এমন হবে না। আমিও ক্ষমা করে দিয়ে ১ বছর ভালভাবেই সংসার করলাম। তারপর ও দেশের বাইরে আমেরিকা গেল।
মাঝখানে একবার ঈদ পালন করতে আসল, সেপ্টেম্বরে ২০১৮ আবার চলে গেল ইউএসএমএলই এর প্রিপারেশন নিচ্ছিল সাথে ফেব্রুয়ারিতে ২০১৯ এ আমার ইউএসএ যাওয়ার কথা।…আমি বারবার বলছি আমাকে ভাল না লাগলে ছেড়ে দাও কিন্তু চিট কর না মিথ্যা বল না।”
“আমার ভালবাসা সবসময় ওর জন্য ১০০% ছিল। আমি আর সহ্য করতে পারিনি। আমাদের দেশে তো ভালবাসায় চিটিং এর শাস্তি নেই। তাই আমিই বিচার করলাম আর আমি চির শান্তির পথ বেছে নিলাম। তোমাদেরও বলছি কাউকে আর ভাল না লাগলে সুন্দরভাবে আলাদা হয়ে যাও চিট কর না মিথ্যা বল না।
আমি জানি অনেকে বিশ্বাস করবে না এত অমায়িক মেয়ে আমিও এসব দেখে ভালবেসেছিলাম। ভিতর বাহির যদি এক হত। সবাই আমার দোষ দিবে সবকিছুর জন্য তাই ব্যাখ্যা করলাম।…ও মা তুমি মাফ করে দিও তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারলাম না। মায়ের ভালবাসার কখনো তুলনা চলে না।…’’